ঝালকাঠির রাজাপুর উচ্চ আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা ১৬ শতাংশ জমির আধা পাকা ধান কেটে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (২১ডিসেম্বর) সকাল ৮টার দিকে রাজাপুর উপজেলার নারিকেল বাড়িয়া গ্রামে ধান কাটা শুরু করলে পুলিশ গিয়ে ধান কাটা বন্ধ করে দেয়। ততক্ষণে প্রতিপক্ষ বিপুল পরিমাণ আধা পাকা ধান কেটে নিয়ে যায়।
অভিযোগে জানা গেছে, নারিকেল বাড়িয়া মৌজার এসএ ৪৬ নং খতিয়ানের এসএ ২৬৬ নং দাগের ১একর ২৬ শতাংশ সম্পত্তির ৯৫ শতাংশতে রেকর্ড সংশোধনীর জন্য ল্যান্ডসার্ভে ট্রাইব্যুনালে মামলা (নং- ৭২/১৬) দায়ের করা হয়। মামলাটির আদেশের বিপক্ষে উচ্চ আদালতে রীট পিটিশন (নং ১০৪০২/১৮) দায়ের করা হয়।
আদালতে ৫ বছর মামলা চলমান থাকা অবস্থায় পর্যালোচনায় উচ্চ আদালতের (হাই কোর্ট) বিচারপতি কাশিফা হোসাইন ও বিচারপতি ফাতিমা নাজিব ২৬ জুলাই ২২ তারিখে এক আদেশ দেন। আদেশে উল্লেখ করা হয়, “ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে খারিজকৃত মোকদ্দমার আপীল বিভাগ চালু হলে সেখানে আপিল মোকদ্দমা চালু করতে পারবে। এছাড়াও উক্ত জমিতে যে যেভাবে দখলে বিদ্যমান আছে সেখানে স্থিতি অবস্থা জারী করেন।”
উচ্চ আদালতে রীটকারী জমির মূল মালিক মৃত. আনোয়ার হোসেনের ছেলে আতিকুর রহমান জানান, ১৯৯৬ সালে ৪টি দাগ থেকে ৯৫ শতাংশ জমি জনৈক মিজানুর রহমানের কাছে ২টি দলিলমূলে হস্তান্তর করা হয়। সেখানে ২৬৬ নং দাগ থেকে ১২৬ শতাংশ জমির ১৬ শতাংশ জমি প্রদান করা হয়।
উক্ত দাগ থেকে একুনে ৯৫ শতাংশ জমি কৌশলে গোপনীয়ভাবে রেকর্ড করিয়ে নেয়। পরবর্তিতে ওই জমির রেকর্ড অনুযায়ী ৯৫ শতাংশই নুরে আলম রাব্বানীর কাছে হস্তান্তর করেন মিজানুর রহমান। ঝালকাঠি যুগ্ম জেলা জজ আদালতে দলিল বাতিল ও সুষ্ঠু বণ্টনের মামলা চলমান রয়েছে। আগামী ৩ জানুয়ারী বাদী পক্ষের স্বাক্ষীর জন্য দিন ধার্য্য রয়েছে।
তিনি আরো অভিযোগ করে জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশে জমিতে চাষাবাদ, বীজ রোপন, সার দেয়া এবং জমির ধান সুরক্ষায় জাল দেয়া হয়। বুধবার সকাল ৮টায় নুরে আলম রাব্বানী, নূরে আলম মল্লিক, মজিবর রহমান, সোহরাব হোসেন, বাদল মল্লিক ও মাকিব মল্লিকসহ একদল প্রতিপক্ষরা জমির বিপুল পরিমান (৩০ আঁটি) আধা পাকা ও কাঁচা ধান অবৈধভাবে কেটে নেয়।
অভিযোগের বিষয়ে নুরে আলম রাব্বানী দাবি করে জানান, ওই জমি দলিলমূলে প্রায় ১৬ বছর আগে মিজান নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ক্রয় করেছেন। মিজান ওই জমি প্রতিপক্ষের কাজ থেকে দীর্ঘদিন আগে ক্রয় করেছিলেন। ক্রয়কৃত ওই জমির দলিলমূলে মালিক হওয়ায় ধান কেটে নিয়েছি।
তবে জমি প্রতিপক্ষের বাড়ির কাছে হওয়ায় চাষাবাদ প্রতিপক্ষরাই করেছে, মাত্র কয়েক কাঠা জমির ধান কাটা হয়েছে তা নেয়া হয়নি। পুলিশ ধান মেম্বরের জিম্মায় দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের ক্রয়কৃত জমি দখলে নিতে গেলে প্রতিপক্ষরা মামলা করে দখলে নিতে বাধা দিচ্ছে।
রাজাপুর থানার ওসি (তদন্ত) মো. গোলাম মোস্তফা জানান, বিরোধীয় জমির ধান কাটার অভিযোগ পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে যে পরিমাণ ধান পাওয়া গেছে তা স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস সোবাহান হাওলাদার ও চৌকিদার ইউসুফ আলী’র জিম্মায় রাখা হয়েছে। জমিতে যে চাষাবাদ করেছে ও বীজ রোপন করেছে তিনি ওই জমির ধান পাবেন।