ফ্রি সরকারি সহায়তায় দর্জি প্রশিক্ষণের নামে লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি প্রতারক চক্র। চক্রটির নেতৃত্বে রয়েছেন কথিত প্রতিষ্ঠান “গ্রামীণ সাজ দর্জি বিজ্ঞান টেকনিক্যাল ফার্ম”-এর চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ।
গত ২৯ অক্টোবর ২০২৫ মানিকপীর উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রথম দিনের ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়। গোপন সূত্রে বিষয়টি জানতে পেরে গণমাধ্যমকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হন এবং দেখা পান শেখ ফরিদের। ক্লাসে থাকা নারী শ্রেণির শিক্ষার্থী ও বাইরে উপস্থিত স্থানীয়দের সামনে প্রতিষ্ঠানটির বৈধতা, অনুমোদন, এবং পূর্ববর্তী প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের প্রমাণপত্র প্রদর্শনের অনুরোধ করা হলে তিনি কোন নথিপত্রই দেখাতে পারেননি।
এতে উপস্থিত এলাকাবাসীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে গণমাধ্যমকর্মীরা পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। এসময় উপস্থিত প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানাতে চাইলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তা সম্ভব হয়নি। পরে চাপে পড়ে শেখ ফরিদ সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ আর করবেন না বলে অঙ্গীকার করেন।
তবে তদন্তে বেরিয়ে আসে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য।
গাইঘাটা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় পূর্ববর্তী এক দর্জি প্রশিক্ষণে সদস্যদের গোপনে সেলাই মেশিন দেওয়ার কথা বলে একে একে অন্তত ১৪ জনের কাছ থেকে ৭০০ থেকে ২,৯০০ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। টাকা নেওয়ার পর চক্রটি সেখান থেকে গা-ঢাকা দেয়।
একইভাবে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার তৌড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণের নামে ২৩ জনের কাছ থেকে ৭০০ থেকে ১,২০০ টাকা আদায় করে চক্রটি।
এরপর আবারও তেপুকুরিয়া ফেডারেশনে “বিনা বেতনে ফ্রি সরকারি সহায়তায় দর্জি প্রশিক্ষণ”—এমন ঘোষণা দিয়ে লিফলেট ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থী সংগ্রহ শুরু করে। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদে শেখ ফরিদ স্বীকার করেন, সদস্যদের সার্টিফিকেট ও বিভিন্ন সুবিধা দেওয়ার নামেও টাকা নেওয়া হয়েছে।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে তিনি কমপক্ষে তিনটি প্রতিষ্ঠানে একইভাবে দর্জি প্রশিক্ষণের নামে লোকজনের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে আসছেন।
স্থানীয়দের দাবি, সরকারি সহায়তার নামে সাধারণ মানুষকে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার এই চক্রের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।