লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় সরকার নির্ধারিত নিয়ম ভঙ্গ করে সার বিক্রির অভিযোগে একাধিক পয়েন্ট থেকে মোট ৯,০৯০ বস্তা সার আটক করে স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকৃত কৃষকদের মাঝে বিতরণ সম্পন্ন করেছে উপজেলা প্রশাসন। এতে প্রশাসনের এমন কঠোর নজরদারিকে স্বাগত জানিয়ে কৃষকদের মধ্যে স্বস্তি ও সন্তুষ্টির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০২৫ সালের ২০ থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা হাসান ইমামের যৌথ তত্ত্বাবধানে বিপণন অনিয়মের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে ইউরিয়া ২,৬০৭ বস্তা, টিএসপি ১,৮১২ বস্তা, এমওপি ৩,৩৫৪ বস্তা ও ডিএপি ১,৩১৭ বস্তা—মোট ৯,০৯০ বস্তা সার জব্দ করা হয়।
পরবর্তীতে আটক করা সার সংশ্লিষ্ট পয়েন্ট থেকেই সরকার নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী প্রকৃত ও তালিকাভুক্ত কৃষকদের হাতে সরাসরি বিতরণ করা হয়। এতে দীর্ঘদিনের জটিলতা ও অভিযোগ থেকে মুক্তি পেয়ে কৃষকেরা প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে প্রশংসা করেন।
সার বিতরণ শেষে উপজেলার সব খুচরা সার বিক্রেতা নিজেদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা উপজেলা কৃষি অফিসে জমা দেন। পরবর্তীতে সেই তালিকা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট হস্তান্তর করা হয়, যা ভবিষ্যতে মনিটরিং ও তদারকিতে সহায়ক হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
স্বচ্ছ সার বিতরণ কার্যক্রমে উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী ও সাধারণ মানুষ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এর ফলে সার বিতরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় শান্তিপূর্ণ ও অভিযোগবিহীনভাবে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা হাসান ইমাম বলেন, কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় প্রশাসনের এই উদ্যোগ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সার বিতরণে কোনো ধরনের অনিয়ম যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করেছি। ভবিষ্যতেও কঠোর নজরদারি অব্যাহত থাকবে।
উপজেলা প্রশাসনের তৎপরতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার ফলে পাটগ্রামের কৃষকদের মধ্যে নতুন করে আস্থা ফিরে এসেছে। অনেকে মনে করছেন, এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে সার সংকট, মজুতদারি ও অতিরিক্ত দামের মতো সমস্যাগুলো কমিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।