নওগাঁ আত্রাইয়ের শাহাগোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে বিবাদীর কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহণে বাদীর সাথে প্রতারণা করে ধর্ষণের মামলায় ও আসামীর হুমকির ঘটনাটি তদন্তের মিথ্যা আপোষনামা আদালতের পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনায় মঙ্গলবার (২১ মার্চ) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, আত্রাই থানায়সহ বিভিন্ন অফিসে এই মিথ্যা প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে পুনরায় তদন্তের জন্য আবেদন করেছেন ভুক্তোভোগী নারীর বাবা লোকমান হোসেন।
জানা গেছে, উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের এক নারীর ওই একই গ্রামের খন্দকার রিফাত (১৯) গাজীপুরের একটি গার্মেন্টস কর্মী হিসেবে চাকুরি করতেন। এ সময় ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ভাড়া বাসা নিয়ে ৫/৬ মাস কয়েকবার ধর্ষণ করেন।
এরই মধ্যে গত বছর জুন মাসের দিকে তারা গ্রামের বাড়ি চলে আসেন। এমতাবস্তায় ২৬ জুন আবারো বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ধর্ষণ করেন রিফাত। পরের মাসে ১৩ জুলাই ওই নারীর গ্রামের বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে বিকেলে পুনরায় দৈহিক মেলামেশা কথা বলিলে ওই নারী বিয়ে কথা বলে রিফাত।
এ সময় রিফাত বিভিন্ন তালবাহানার এক পর্যায় বিয়ে করার অস্বীকার করলে ওই নারী কান্নাকাটি শুরু করেন। কান্নাকাটির ঘটনাটি জানতে পেরে প্রতিবেশি এতে রিফাতকে ঘরের মধ্যে আটক করেন।
এরপর আবার বিয়ে করার অস্বীকার করলে পর দিন ১৪ জুলাই রিফাতকে আত্রাই থানায় সোপর্দ করে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন নারী। মামলায় রিফাতকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।
কয়েক মাস হাজতবাসের পর বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিনে এসে রিফাত ওই নারীর বাবাকে ১ সেপ্টেম্বর বিকেলে মামলা তুলে নেয়াসহ মারপিটসহ খুন জখমের হুমকি প্রদান করেন।
ঘটনায় পরদিন ২ সেপ্টেম্বর থানা একটি অভিযোগ দায়ের করে ওই নারীর বাবা। যাহার নং ৯৬, তার সূত্রধরে এনজিআর ৩৬/২২ (আত্রাই) নং মামলাটি গত ১৬ ডিসেম্বর শাহাগোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম মামুনুর রশিদের কাছে তদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
এরপর গ্রাম আদালতে হাজিরার নামক কাগজে বাদী এবং স্বাক্ষীগণের স্বাক্ষর নিয়ে প্রতারণামূলক মিথ্যা আপোষ নামে গত ১২ মার্চ নওগাঁ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেড আমলী-৮ (আত্রাই) আদালতে মিথ্যা আপোষ নামা প্রতিবেদন করেছেন।
ভুক্তোভোগী নারীর বাবা লোকমান হোসেন জানান, এই ঘটনায় বিবাদীর সাথে গোপন আতাঁত গড়ে তোলে উৎকোচ গ্রহণের মাধ্যমে চেয়ারম্যান এসএম মামুনুর রশিদ এই মিথ্যা আপোষ নামা আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন। এই মিথ্যা প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে পুনরায় তদন্ত এবং তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
বিবাদীর কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান এসএম মামুনুর রশিদ জানান, বিজ্ঞ আদালতে সাধারণ ডায়রির ঘটনাটি নিষ্পত্তির বিষয়টি পাঠালে তাদের উপস্থিতে আপোষ নামা হয়। সেই অনুসারে প্রতিবেদন বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকতেখারুল ইসলাম গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, যেহুতু ধর্ষণ ও হুমকি বিষয়টি বিজ্ঞ আদালতে মামলাটি চলমান রয়েছে। সেহুতু তাদের বিজ্ঞ আদালতের সরাপন্ন হওয়ার জন্যে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।