নওগাঁয় ছলছল চোখে ভক্তরা বিসর্জন দিলেন দেবী দুর্গাকে। বিসর্জনের এ বিষাদে জড়ো হয়েছেন ভক্ত, পূজারী, পর্যটক, দর্শনার্থীসহ হাজারও মানুষ। সমকণ্ঠে ‘জয়, দুর্গা মায়ের জয়’ বলতে বলতে প্রতিমা বিসর্জনে এগিয়ে যান তারা। এ সময় অনেকে শেষবার প্রণাম করেন দুর্গাকে। কেউবা মনের আশা পূরণে গুঁজে দেন চিরকুট। বিষাদের এ আয়োজন বুধবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে ছিল। নওগাঁয় দুর্গাপূজা শেষে ছোট যমুনা নদীতে প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হলো স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসব।গত ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল দেবীপক্ষ।
প্রতিবারের মতো মহাষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী ও মহানবমীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজার হাজার নারী-পুরুষ ধর্মীয় নানা আচার-অনুষ্ঠান পালন করেছেন। দশমীর দিনে আজ পূজা শুরু হয় সকাল ১০টা ২০ মিনিটে এবং পূজা শেষ ও দর্পণ বিসর্জন হয় সন্ধ্যা ৭টায়।
পঞ্জিকামতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার গজে চড়ে মর্ত্যলোকে এসেছিলেন। আজ স্বর্গালোকে বিদায় নেবেন নৌকায় চড়ে। এবার জেলায় ৮২৮টি স্থায়ী ও অস্থায়ী মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এর আগে আজ বিকেলে নওগাঁর নিয়ামতপুরের ছাতড়া এবং রামনগর বারোয়ারী দূর্গা মন্ডোপ পরিদর্শনে দেখা যায়, ভক্তরা শেষদিনে সিঁদুর খেলার মাধ্যমে এবং তাদের রীতি গুলো অনুসরণ করে শেষ বিদায় জানান দেবী দূর্গাকে।
রামনগর মন্দিরের সভাপতি কানাই বর্মন এই সময় বলেন, আজ মা ফিরে যাচ্ছেন কৈলাসে এই জন্য সকাল থেকেই ভক্তরা সিঁদুর খেলা এবং নানান বয়সী মানুষেরা নৃত্যের মাধ্যমে মাকে বিদায় জানিয়েছেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নাজমুল এবং রবিউল ইসলাম (মন্টু) এই সময় ছিলেন সনাতনী ধর্মালম্বীদের মন্ডোপ গুলোতে। তাদের জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তার মাধ্যমে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় উৎসব টি আজ শেষ হচ্ছে । এতো সুন্দর পরিবেশ পূজা পালন করার জন্য ভক্তদের প্রতি ধন্যবাদ জানাই।
ছাতড়া বারোয়ারি দূর্গা মন্দিরের লক্ষ্মণ বলেন, আমাদের মন্দিরের অবকাঠামো উন্নয়নে যদি খাদ্য মন্ত্রী আমাদের অবিভাবক সাধন চন্দ্র মজুমদার একটু সাহায্য করেন তাহলে আগামীতে আমরা আরো বড়ো আয়োজনের মাধ্যমে মায়ের পূজা আয়োজন করতে পারবো।
রামনগর মন্দিরে সেক্রেটারি প্রশান্ত বর্মন বলেন, আজ বিজয়াদশমী, এক বছর পরে মা এসেছিলেন আমাদের মাঝে। আজ মাকে বিদায় জানাতে হচ্ছে। খারাপ লাগতেছে তবে আবারো মা আগামীতে আমাদের মাঝে আসবেন আরো ধুমধামে মায়ের পূজা আয়োজন করতে পারবো এই কামনাই করি।
সন্ধ্যা-আরাত্রিকের পর প্রতিমা বিসর্জন ও শান্তিজল গ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ হয় পাঁচ দিনব্যাপী সব আয়োজন।