চট্টগ্রামের বাঁশখালীর সাধনপুর এলাকা বাসিন্দা মহিউদ্দিন। কাজ করতেন নগরীর চকবাজারের একটি ফটোকপির দোকানে। এরমধ্যে জড়িয়ে পড়েন অনলাইন জুয়া খেলায়। জুয়া খেলে নিঃস্ব হয়ে পড়েন। টাকার অভাবে অপহরণের পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর চরণদ্বীপ এলাকা থেকে আফরান নুর আবির (৮) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে অপহরণ করে। কিন্তু মুক্তিপণ আদায়ে পুলিশের পাতানো ফাঁদে পড়ে ধরা পড়ল অপরহরণকারী চক্র। গত ২৫ মার্চ (সোমবার) দুপুরে অপহৃত হয় মতে, বোয়ালখালীর চরণদ্বীপ এলাকার মাদ্রাসা শিক্ষার্থী মো. আফরান নুর আবির (৮)।
আবির ওই এলাকার নুরুল আজিমের ছেলে। ২ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে সবার ছোট। অপহৃত আবিরের বাবা নুরুল আজিম বলেন, ২০১২ সালের দিকে নগরীর চকবাজারে ফটোকপির দোকানে পরিচয় হয় বাঁশখালীর সাধনপুর গ্রামের মহিউদ্দিনের সঙ্গে। সেই সূত্রে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। অনেক টাকা ধার দিয়েছিলাম।
২০২২ সালে দেখা করে টাকা ধার চেয়েছিল। কিন্তু দিতে পারিনি। কিন্তু সেই মহিউদ্দিন এমন ঘটনা ঘটাবে তা কল্পনাও করতে পারিনি।
বোয়ালখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারোয়ার সাংবাদিকদের বলেন, 'আবিরের বাবা থানায় জিডি করলেও কোনো ক্লু পাচ্ছিলাম না। একদিন পর (২৬ মার্চ মঙ্গলবার) ভোরে আবিরের পিতার মোবাইলের ইমুতে এক ব্যক্তি টেক্সট (বার্তা) পাঠিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। সেই সূত্র ধরে আবিরের ছবি নিয়ে নিশ্চিত হই।
তারপর টাকার অঙ্ক নিয়ে দর কষাকষি চলে। চার লাখ টাকায় রাজি হয় অপহরণকারীরা।রওসি বলেন, 'তাদের দাবি মতো পর্যায়ক্রমে চার লাখ টাকা মোবাইল ব্যাংকিং নাম্বারে পাঠানো হয়। এরপর ২৬ মার্চ দুপুরে আবিরকে নগরীর চান্দগাঁও বাহির সিগন্যাল এলাকার একটি মাদ্রাসার সামনে সিএনজি ট্যাক্সি থেকে নামিয়ে দেয়। আবিরকে অক্ষত উদ্ধার করে অপহরণকারীদের ধরার অভিযান শুরু হয়।
পুরো বিষয়টি মনিটরিং ও নির্দেশনা দেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু স্যার। পুলিশ সূত্র জানায়, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জেলা ডিবি ও বাঁশখালী থানা পুলিশের সহায়তায় অপহরণে ব্যবহৃত সিএনজি ট্যাক্সিসহ চালক নুরুল আলমকে (৩৬) গ্রেপ্তার করা হয়। অপরদিকে, যশোর জেলার শার্শা থানা পুলিশ মুক্তিপণের টাকা গ্রহণের সময় ইকবাল হোসেন (২৭) এবং মূল পরিকল্পনাকারী মহিউদ্দিনকে (৪০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বোয়ালখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. খায়রুল ইসলাম খান বলেন, 'অপহরণের মূল পরিকল্পনাকারী মহিউদ্দিন অনলাইনে জুয়া খেলে। জুয়া খেলে টাকা পয়সা সব হারিয়ে ফেলে। আবিরের পিতার কাছে সম্প্রতি টাকা ধার চেয়েছিল মহিউদ্দিন। মূলত টাকার জন্য আবিরকে অপহরণের পরিকল্পনা করা হয়।
অপরাধীর খোজে প্রতিদিন, যেকোন খবর প্রকাশের জন্য মেইল করুন- wsbnews24@gmail.com
Copyright © 2025 wsbnews24.com. All rights reserved.