ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস ও স্বাধীনতার স্থাপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে অংশ নেননি উপজেলা আ’লীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ নেতৃবৃন্দরা। এমনকি উপজেলার ৬ ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলার অধিকাংশ মেম্বরাও আসেননি। এতে সাধারন নেতাকর্মী ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দের মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৫আগষ্ট) সকালে উপজেলা অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসন দিবসটি উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর- কাঁঠালিয়া) আসনে আ’লীগের মনোনিত নৌকা প্রতীকের তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য বিএইচ হারুন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান খানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরউজ্জামান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা আক্তার লাইজু ও রাজাপুর থানার ওসি পুলক চন্দ্র রায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া কয়েকজন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা জানান, শোক দিবসের ব্যানারে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অ্যাড. এএইচএম খায়রুল আলম সরফরাজ ও উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক জিয়া হায়দার খান লিটনের নাম বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকলেও তারা অনুষ্ঠিানে অংশ নেননি। এছাড়া উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যানগণ ও উপজেলার ৬ ইউনিয়নের মেম্বরাও দেখা যায়নি। হাতে ঘোনা কয়েকজন মেম্বর এসেছিলেন। স্বাধীনতার স্থাপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের মত একটা সরকারি অনুষ্ঠানে চেয়ারম্যান-মেম্বররাও আসবেন না এটা তো হতে পারে না বলেও অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
মঠবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ জালাল হাওলাদার, সাতুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মাইনুল হায়দার নিপু ও শুক্তাগড় ইউপি চেয়ারম্যান বিউটি সিকদার জানান, সকালে উপজেলা আ’লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে সাড়ে ৯ টায় ডিসি অফিসের জুম মিটিং ছিল অংশ নিয়েছেন তারা কিন্তু উপজেলা প্রশাসনের শোক সভায় দাওয়াত ছিল কিন্তু যাননি। তাছাড়া ইউনিয়ন পরিষদেও শোক দিবসের অনুষ্ঠান করা বাধ্যতামূলক ছিল, তাতে অংশ নিয়েছি।
সাতুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মাইনুল হায়দার নিপু জানান, মূলত এমপি অংশ নেয়ায় আমরা কেহই যাইনি। প্রায় ২ বছর ধরেই এমপি অংশ নিলে তাতে আমরা যাই না।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে উপজেলা আ’লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এএইচএম খায়রুল আলম সরফরাজ সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা প্রশাসনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত ছিল এবং আমাদের যাওয়ার প্রস্তুতিও ছিল। কিন্তু এমপি অনুষ্ঠানে থাকায় যাইনি। এমপির সাথে আমাদের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না, সামনে নির্বাচন। তাই দ্বন্দ্বে বা ভুল বোঝাবুঝিতে জড়াতে চাই না। তিনি বলেন, এমপি উপজেলা ও ইউনিয়ন নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী দিয়েছেন। উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডেও পাল্টা কমিটি করেছে। তার অনুসারীদের সকল সরকারি সুবিধা প্রদান করে থাকেন।
উপজেলা আ’লীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ ইউপি চেয়ারম্যানরা না আসার কারন জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা নুসরাত জাহান খান জানান, তাদের দাওয়াত দেয়া হয়েছিল, কেন আসেননি তা বলতে পারবো না। এ বিষয়ে ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর- কাঁঠালিয়া) আসনে সংসদ সদস্য এমপি বিএইচ হারুন কোন মন্তব্য করেননি।