আজ ভয়াল ২৪ ডিসেম্বর ঝালকাঠিতে ভয়াবহ এমভি অভিযান-১০ লঞ্চ অগ্নিকান্ডের লোমহর্ষক দিন। এদিন দেশের ইতিহাসে প্রথম যাত্রীবাহী লঞ্চ অগ্নিকান্ডে সম্পূর্ন ভষ্মিভূত হয়ে ৪৭ যাত্রীর প্রাণ হারানো ও অর্ধশতাধিক নিখোজের ঘটনায় হতবিহ্লিত হয়ে যায় ঝালকাঠি-বরগুনা জেলার মানুষ।
এক বছর পূর্বের সেই ভায়াল স্মৃতি মনে করে আজও নির্বাক হয়ে যায় ঝালকাঠিবাসী। তবে ঘটনার পর সরকারের একাধিক মন্ত্রী-সচিবের সফর কালে ঝালকাঠি নৌ-ফায়ার স্টেশন স্থাপনের প্রতিশ্রুতি আজও পূরন হয়নি বলে অভিযোগ জেলাবাসীর।
জানাগেছে, ঢাকা থেকে প্রায় হাজার খানেক যাত্রী নিয়ে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চটি বরিশাল-ঝালকাঠি হয়ে বরগুনা যাচ্ছিল। ২৪ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ শুক্রবার রাত ৩টার দিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে থাকা অবস্থায় লঞ্চটিতে আগুন লাগে। লঞ্চের ইঞ্জিন রুমের দিক থেকে আগুনের লেলিহান শিখা খুব দ্রুতো পুরো লঞ্চের নীত থেকে দ্বিতীয়-তৃতীয় তলায় ছড়িয়ে পড়ে।
আগুনের ভয়াবহতায় আতংকিত লঞ্চের মাষ্টার (চালক), লঞ্চটি পার্শ্ববর্তী দিয়াকুল এলাকায় ভিড়িয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় লঞ্চের বহু যাত্রী অগ্নিদগ্ধ হয়ে প্রাণে বাঁচতে নদীতে ঝাঁপ দেয়। তীব্র শীতের রাতে অনেক যাত্রী কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুনে ভষ্মিভূত হয়ে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
তবে অগ্নিদগ্ধদের উদ্ধার এবং তাদের আশ্রয় ও সেবা দিয়ে মানবতার দৃষ্টান্ত রেখেছেন ঝালকাঠি শহরের চরওয়ার্ডের লোকজন ও দিয়াকুল গ্রামবাসী সেদিন মানবতার অনন্য নজির স্থাপন করেন। লঞ্চ থেকে অগ্নিদগ্ধ ও আতংকিত হয়ে নদীতে ঝাপিয়ে পড়ে অধিকাংশ মানুষকে তার উদ্ধার করে।
এরপর ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যদের সহযোগীতায় আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরন করেন। আর যারা আতংকে নদীতে ঝাপ দেয় তাদের উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়, শিতবস্ত্র ও খাদ্য দিয়ে সহযোগীতা করেন।
সেদিনের সেই ঘটনার স্মৃতি স্মরন আজও শিউরে ওঠেন ঝালকাঠি শহর ও দিয়াকুল গ্রামের মানুষ। ঝালকাঠিতে ফায়ার সার্ভিস বিভাগের নৌফায়ার স্টেশন না থাকায় অগ্নি-র্দূঘটনায় এত মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে বলে দাবি অনেকের।
ঘটনার পর বর্তমান সরকারের নৌপরিবহন মন্ত্রী, পানিসম্পদ মন্ত্রীসহ এমপি-সচিবরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন কালে ঝালকাঠি নৌ-ফায়ার স্টেশন স্থাপনের আশ্বাস দেন। তবে বছর পেড়িয়ে গেলেও ঝালকাঠিতে নৌ-ফায়ার স্টেশন স্থাপনের প্রতিশ্রুতি আজো পূরন হয়নি।
ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন মাস্টার শফিকুল ইসলাম জানায়, নদীমাতৃক জেলা হিসাবে ঝালকাঠির অর্ধেকের বেশী এলাকায় অগ্নিদূর্ঘটনা প্রতিরোধে নৌ-ফায়ার স্টেশনই একমাত্র ভরসা। এমভি অভিযান-১০ লঞ্চ দূর্ঘটনার পর আমরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে নৌ-ফায়ার স্টেশন নির্মাণে জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি। তাই এখোন এবিষয়ে আমরা সরকারী সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি।
অপরাধীর খোজে প্রতিদিন, যেকোন খবর প্রকাশের জন্য মেইল করুন- wsbnews24@gmail.com
Copyright © 2025 wsbnews24.com. All rights reserved.