শিরোনাম:
ইবিতে পরীক্ষা দিতে এসে তোপের মুখে ছাত্রলীগ নেতা বঙ্গমাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভিসি ঢাবি অধ্যাপক রোকনুজ্জামান বিশ্বম্ভরপুরে লাকড়ির ট্রাকে ভারতীয় চিনি আলফাডাঙ্গায় মধুমতি নদী থেকে দুই দিন পর নিখোঁজ শিশুর লাশ উদ্ধার  আলতাফ মিয়া কতৃক মিথ্যা মামলা ও নাগরিক টিভির সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি মুস্তাফিজুর রহমান বাবুর সংবাদ প্রচারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন নওগাঁ আস্তান মোল্লা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ সড়ক সেক্টর সংস্কার কমিশন গঠনের দাবী যাত্রী কল্যাণ সমিতির বোয়ালমারীতে সোনালীকা ডে, সার্ভিস ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত আলফাডাঙ্গায় ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত জামায়াত ক্ষমতায় আসলে জাতির মালিক নয় সেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে—– আমীরে জামায়ত ডা. শফিকুর রহমান

দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের দাবি-বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি

এম মনির চৌধুরী রানা,বিশেষ প্রতিনিধিঃ
  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০২২
68.7kভিজিটর

দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের দাবি-বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি

সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের বিধান জরুরি ভিত্তিতে চালু করে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের দাবী জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

আজ ২১ অক্টোবর সকালে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে নগরীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত “সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ও জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল সক্রিয় করার দাবী”তে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই দাবী জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার তার মেয়াদের শেষ প্রান্তে চলে আসলেও নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী নিরাপদ সড়কের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ দৃশ্যমান হয়নি। ফলে সড়কে প্রতিদিন অসংখ্য প্রাণহানি ঘটছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতি বছর সড়কে প্রায় ৮ হাজারের বেশি প্রাণহানির তথ্য মিলেছে। সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, সড়কে প্রতিদিন ৬৪ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। এই তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩,৩৬০ জন মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে। প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ আহত হচ্ছে। প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ৮০ হাজার মানুষ প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ছে। এর মধ্যে ১২ হাজারের বেশি ১৭ বছরের কম বয়সী শিশু। এ হিসাবে দেখা যায়, প্রতিদিন গড়ে ২২০ জন মানুষ প্রতিবন্ধী হচ্ছে কেবল সড়ক দুর্ঘটনায়। অন্যদিকে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, সারা বিশে^ প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩ লাখ মানুষ মারা যায়। বাংলাদেশে মারা যায় ২৪,৯৫৪ জন। সংস্থাটির তথ্য মতে হতাহতদের ৬৭ শতাংশই ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী। এক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ব্যক্তিরা সবচেয়ে বেশি। সংস্থাটি দাবী করছে, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনাজনিত জিডিপির ক্ষতি ৫.৩ শতাংশ।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরো বলেন, দেশের কর্মক্ষম ব্যক্তিরাই সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে জাতীয় অর্থনীতিতে। দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তি এবং তাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের আর্থসামাজিক যে ক্ষতি হচ্ছে। বুয়েটের এআরআই এর হিসেব বলছে, গত তিন বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় এমন ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৯ হাজার কোটি টাকা। কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা যদি নির্ভরশীল মানুষের তুলনায় বেশি হয়, তাহলে সেটিকে জনসংখ্যার বোনাস বা ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বলা হয়। বাংলাদেশ এ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের জন্য গর্ব করে। সড়ক দুর্ঘটনা এ গর্বের জায়গাতেই বেশি আঘাত হানছে।

পুলিশের তথ্যভান্ডার বিশ্লেষণ করে এআরআই বলছে, গত এক দশকে দেশের সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের ৫৪ শতাংশের বয়স ১৬ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। আর দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের সাড়ে ১৮ শতাংশ শিশু। এদের বয়স ১৫ বছরের নিচে। তিনি আরো বলেন, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের হিসেবে সড়ক দুর্ঘটনায় একজন কর্মক্ষম ব্যক্তি প্রাণ হারানোর কারণে ২৪ লাখ ৬২ হাজার ১০৬ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়। সেই হিসেবে প্রত্যেক নিহত ব্যক্তির পরিবার এই পরিমাণ অর্থ রাষ্ট্র থেকে ক্ষতি পূরণ পাওয়ার হকদার। যদিও সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এ গঠিত সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের আর্থিক সহায়তা তহবিল হতে নিহত ব্যক্তির পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ও আহত ব্যক্তিকে ৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান থাকলেও আইন কার্যকরের ৩ বছরের মাথায় এই ক্ষতিপূরণ প্রদানের কার্যক্রম আজো শুরু করা হয়নি। তিনি জরুরি ভিত্তিতে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের আর্থিক সহায়তা কার্যক্রম চালুর দাবী জানান। একই সাথে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি কমাতে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল সক্রিয় করার দাবী জানান।

এসময় ভিকটিম পরিবারের সদস্যরা তাদের নানা অভাব অভিযোগ তুলে ধরে সড়ক নিরাপত্তা তহবিল থেকে সহযোগিতা কামনা করেন।

আরো বক্তব্য রাখেন বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের সহকারি অধ্যাপক কাজী সাইফুন নেওয়াজ, বিশিষ্ট সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, যাত্রী কল্যাণ সমিতির সহ সভাপতি তাওহিদুল হক, যুগ্ম মহাসচিব এম মনিরুল হক, বাংলাদেশ মানবাধিকার সমিতির সভাপতি মনজুর হোসেন ইশা, সেইফ ড্রাইভের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুল কাইয়ুম প্রমুখ ।

এই সময় ভিকটিম পরিবারের পক্ষ থেকে বাস ভাড়া নিয়ে তর্কের জেরে রাজধানীর ওয়ারীতে গ্রীন বাংলা পরিবহনে সহকারীর ধাক্কায় বাসের নীচে পড়ে নিহত ইরফান আহমেদের স্ত্রী ইসমত আরা, মিরসরাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত গ্রীন লাইন পরিবহনের চালক আনোয়ার হোসেনের ছেলে আরাফাত হোসনে, রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় বিমানবন্দর সড়কে জেব্রা ক্রসিংয়ের উপর দিয়ে সড়ক পারাপারের সময় বেপরোয়া বাসের চাপায় নিহত আদনান তাসিনের পিতা আহসানউল্লাহ টুটুল,

গুলিস্থানে স্বদেশ পরিবহনের বাস চাপায় নিহত সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মী মোঃ ফারুকের স্ত্রী জোহরা বেগম, ঢাকা-চট্টগ্রামের মহাসড়কের গৌরীপুরে বাস চাপায় আহত তিশা পরিবহনের হেলপার মাহবুবুল ইসলাম, ভিকটিম পরিবারের সদস্য কামাল হোসেন, সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ। সড়ক দুর্ঘটনার শিকার এইসব পরিবারের সদস্যরা তাদের দুঃখ দুর্দশার চিত্র তুলে রাষ্ট্রের কাছে আইন অনুযায়ী আর্থিক সহায়তা দাবী করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর
কপিরাইট ©২০০০-২০২২, WsbNews24.com এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত।
Desing & Developed BY ServerNeed.Com
themesbazarwsbnews25
x