গঙ্গাচড়া উপজেলায় সেচের মাধ্যমে আবাদ শুরু করা হলেও সারের সংকট কৃষকের ‘মরার উপর খাঁরার ঘা’ হয়ে দেখা দিয়েছে। এম ও পি (পটাশ) সারের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। এম ও পি (পটাশ) সারের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। সাড়ে ৭৫০ টাকার পটাশ সার কিনতে হচ্ছে দ্বিগুণ দামে। আবার বেশি দামেও মিলছে না এই সার। অনেক কৃষক ডিলারদের কাছে ঘুরে ঘুরেও সার না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ছেন। জমিতে সার দিতে না পেরে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। আমন আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। শঙ্কা দেখা দিয়েছে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে।এমনিতে জ্বালানী তেলের মূল্যবৃদ্ধি আর অনাবৃষ্টির কারণে চলতি আমন আবাদ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
বোঝাই যাচ্ছে কৃত্রিমভাবে সারের সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কারণ এখন চলছে আমনের মৌসুম। এ সময় কৃষকরা সার না পেলে উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল। বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে খাদ্যনিরাপত্তার বিষয়টি অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আর এ সময়েই যদি কৃষকরা সার না পান, তাহলে তারা ধান উৎপাদনে নিরুৎসাহিত হবেন, এটাই স্বাভাবিক। আর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে খাদ্যনিরাপত্তায়। কাজেই বিষয়টিতে জরুরি ভিত্তিতে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন কৃষক ও সাধারণ জনগণ।
এ অবস্থায় সারের কৃত্রিম সংকট রোধে অসাধু ডিলারদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। সেক্ষেত্রে নিয়মিত বাজার মনিটরিং চালিয়ে যেতে হবে। ভেঙে দিতে হবে ডিলারদের সিন্ডিকেট। বাজার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সরকারের কঠোর ভূমিকা না থাকার অভিযোগ দীর্ঘদিনের।ডিলাররা বলছেন,চাহিদার তুলানায় সিকিভাগ পটাশ সারও পায়নি তারা। ফলে এমওপি সার কোথাও নেই। কৃষকরা বলছেন অন্য সার পাওয়া গেলেও পটাশ সারের সংকট দেখা দিয়েছে। অতিরিক্ত দামেও চাহিদা অনুযায়ী সার পাওয়া যাচ্ছেনা।
উপজেলার গংগাচড়া বাজারে সার কিনতে আসা কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, পটাশ (এমওপি) সার বাজারে আগুন। দ্বিগুণ দামেও মিলছেনা এই সার। আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
উপজেলা মন্হনা বাজারে সার কিনতে আসা বড়বিল গ্রামের কৃষক বাতেন মিয়া বললেন, বৃষ্টি না হওয়ায় আমন আবাদ পিছিয়ে গেছে। একেতো জ্বালানীর দাম বেড়েছে। এরপর সারের সংকট। বেশি দাম দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না পটাশ সার। এত খরচ করে আবাদ করা কঠিন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ শরিফুল ইসলাম জানালেন,পটাশ (এম ও পি) সারের সংকট রয়েছে, তবে ইউরিয়া সারের তেমন সংকট নেই। বরাদ্দ অনুযায়ী এম ও পি সার সরবরাহ না পাওয়ায় এই সংকট। বরাদ্দ পাওয়া গেলে চাহিদা পূরণ হবে। তিনি বলেন, সারের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। আমরা বাজার মনিটরিং করছি। কোন অনিয়ম পেলেই ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।