ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় এক নিরীহ ভ্যান চালককে একটি হত্যা প্রচেষ্টা মামলার মিথ্যা আসামী বানিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।মোঃ আরব আলী ভূইয়া নামের এক ব্যক্তির দায়ের করা মিথ্যা মামলায় আসামী সুমন মোল্লা বর্তমানে কারাগারে বন্দী রয়েছে।
এতে সুমনের পরিবারে চরম দূর্গতি নেমে এসেছে। সিমাহীন দূঃখ কষ্টে দুই সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন স্ত্রী শান্তা বেগম।
তথ্যানুসন্ধান কালে জানাযায়,মাগুরা জেলার আবালপুর গ্রামের কালাম মোল্লার ছেলে সুমন মোল্লা আলফাডাঙ্গা উপজেলা সদরে স্বপন কাজীর বাড়িতে ভাড়া থেকে ভ্যান চালিয়ে জীবীকা নির্বাহ করে থাকেন।
তার ঘরের অপর এক কক্ষে ভাড়া থাকেন সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী । গত ৩০ জুলাই রাতে ওই প্রবাসীর স্ত্রী ঘরে প্রবেশ করেন পার্শ্ববর্তী বোয়ালমারী উপজেলার সেকপুর গ্রামের মোঃ আরব আলী ভূইয়া। তিনি আলফাডাঙ্গা উপজেলার নওপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে কর্মরত।
নির্জন বাড়িতে প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে পুরুষের উপস্থিতি টের পেয়ে এলাকার লোকজন অনৈতিক কার্যকলাপের সন্দেহে ঘরটি ঘিরে ফেলে আরব আলী কে অবরুদ্ধ করেন। এক পর্যায়ে আরব নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে সেখান থেকে বেড় হয়ে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথিমধ্যে আলফাডাঙ্গা পশু হাসপাতালের সামনে পৌছলে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা একদল দূর্বৃত্ত তার উপর হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করে। এ ঘটনায় একদিন পরে থানায় মামলা দায়ের করেন আরব আলী। এতে তিন জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাতনামা আরো একাধিক ব্যক্তিকে আসামী করা হয়। প্রধান আসামী করা হয় প্রবাসীর স্ত্রীর নিকটতম প্রতিবেশী দরিদ্র ভ্যান চালক সুমন মোল্লাকে। মামলা দায়েরের দিনই আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশ সুমনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়ে দেন। ভ্যান চালক সুমন মোল্লাকে আসামী করাতে যেমন প্রশ্ন উঠেছে তেমনি পরিবারের একমাত্র উপার্জন ক্ষম ব্যক্তিটি কারাবন্দী হওয়ায় তার সংসারে নেমে এসেছে মহা দূর্দিন।
সুমনের স্ত্রী শান্তা বেগমের দাবী-তার স্বামী নির্দোষ। পূর্বশত্রুতার জের ধরে তাকে মামলার আসামী করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে আরব আলী পরকিয়ার সম্পর্ক রয়েছে। ওই লোক মাঝেমধ্যে রাতে প্রবাসীর স্ত্রীর কাছে আসতেন। এটা প্রতিবেশী হিসাবে আমার স্বামী সুমন ভালো চোখে দেখতেননা। একারনে আগে থেকেই তার উপর ক্ষিপ্ত ছিলেন আরব। ফলে রাতের আঁধারে হামলার ঘটনা ঘটলেও আরব আলী উদ্দেশ্য মূলক ভাবে প্রতিহিংসা বসতঃ আমার স্বামীকে আসামী বানিয়েছে। আরব যখন প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে ধরা পরে তখন আমার স্বামী বাড়িতেই উপস্থিত ছিলেন। তাহলে তিনি হামলার স্থলে গেলেন কখন আর আরব আলীকে মারলেনই বা কখন? শান্তা বলেন,আমার স্বামী জেলে যাওয়ায় পরিবারের আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে থেকে মানবেতর জীবন যাপন করছি।
আমি আমার স্বামীর নিঃশর্ত মুক্তি ও আসামীর তালিকা থেকে তার নাম বাদ দেয়ার জোর দাবী জানাচ্ছি। মোঃ শাহ আলম,রাকিবুল ইসলাম নামে দুজন এলাকাবাসী বলেন,আরব আলী ও প্রবাসীর স্ত্রীর পরকিয়ায় বাধা দিতে গিয়েই তাদের শত্রু হয় সুমন। তাই রাতের আঁধারে অন্য কোন ঘটনায় আরব আলী হামলার শিকার হলেও মামলায় মিথ্যা আসামী বানানো হয়েছে অসহায় ভ্যান চালক সুমন মোল্লাকে। এদিকে হত্যাচেষ্টা মামলার বাদী আরব আলী বলেন,সুমনের সঙ্গে আমার পূর্ব থেকে বিরোধ চলে আসছিলো। একাধিক বার সে আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। ওই প্রবাসীর স্ত্রী আমার ছাত্রী। ঘটনার দিন আমি তাকে প্রাইভেট পড়িয়ে বাড়ি ফেরার পথে সুমন তার বাহিনী নিয়ে আমার উপর হামলা চালায়।