“কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে-আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে” জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই মনোমুগ্ধকর গান আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় কৃষ্ণচূড়ার তাৎপর্য।
বাংলাদেশের প্রকৃতিতে শিমুল মানেই বসন্ত। তেমনই গ্রীষ্মকালের বাহার কৃষ্ণচূড়া ফুল। মেহেরপুরের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে মনকাড়া গাছ। সবুজ সবুজ চিকন পাতা। ফাঁকে ফাঁকে লাল লাল কৃষ্ণচূড়া ফুল। দেখলেই যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। মন নেচে উঠে আনন্দে। কৃষ্ণচূড়া একটি বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। যার বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিক্স রোজিয়া। এ গাছ চমৎকার পত্রপল্লব এবং আগুনলাল ফুলের জন্য বিখ্যাত।
ভিনদেশী এ ফুলের বৃক্ষগুলো আমাদের দেশে এসে বিভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে। অনেকেই ধারণা করেন রাধা কৃষ্ণের নাম অনুসারে এ বৃক্ষের নাম কৃষ্ণচূড়া। কৃষ্ণচূড়ার বড় খ্যাতী হলো গ্রীষ্মে যখন এই ফুল ফোটে, তখন এর মনোমুগ্ধকর রুপে মুগ্ধ হয়ে পথচারীরাও থমকে তাকাতে বাধ্য হন।
চলিত এই সময়টাতে সারাদেশের মতো মেহেরপুরেও চোখ ধাঁধানো টুকটুকে লাল কৃষ্ণচূড়ায় সেজেছে গ্রীষ্মের প্রকৃতি দূর থেকে দেখলে মনে হয়, বৈশাখের রৌদ্দুরে সবটুকু উত্তাপ গায়ে মেখে নিয়েছে রক্তিম কৃষ্ণচূড়ার পুষ্পরাজি।
মেহেরপুরের বিভিন্ন সড়কে ঝাঁক ঝাঁক কৃষ্ণচূড়ার গাছ এখন সাধারণ মানুষের মনে রুপোলী লাল খোরাক জোগাচ্ছে। গাংনী উপজেলার জোড়পুকুড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে কৃষ্ণচূড়ার রাঙা লাল গাছগুলোর দিকে তাকিয়ে চোখ সহজে ফেরাতে পারেনা কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়কে যাতায়াত করা মানুষজন এবং বিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
জোড়পুকুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা স্বপন জানান, ‘বৃক্ষ নিধনের শিকার হয়ে দিন দিন কমে যাচ্ছে মনোমুগ্ধকর এই গাছ। একসময় মেহেরপুর জেলা থেকে এই গাছ হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
কুতুবপুর স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক রেজাউর রহমান বলেন, ‘কৃষ্ণচূড়ার রুপ রস গন্ধ প্রকৃিতিতে অনন্য। কৃষ্ণচূড়াকে টিকিয়ে রাখতে হলে গাছ নিধন বন্ধে সকলকে সম্মিলিত ভাবে এগিয়ে আসতে হবে।’
গাংনী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, ‘বনবিভাগের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ফলে অনেক সময় এবিষয়ে আমরা কোন মন্তব্য করতে পারিনা।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক স্বপন কুমার খাঁ জানান, বনবিভাগ সবসময় বৃক্ষ নিধন বন্ধে কাজ করে যাচ্ছে। আমরাও বিভিন্ন সময় এসব বিষয়ে তদারকি করে আসছি।’