স্বাধীনতা আন্দোলনে দেশের প্রথম শহীদ শংকু সমজদারের প্রয়াণ দিবস আজ ৩ মার্চ। যার রক্তে রক্তাক্ত হয়েছিলো রংপুরের মাটি। দাউ দাউ করে জ্বলে উঠেছিলো বিদ্রোহের আগুন।
বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারাদেশ বিক্ষোভে ফেটে পড়েছিলো মুক্তির সংগ্রাম আর শ্লোগানে।১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলনে যোগ দিয়ে রংপুরের প্রথম শহীদ শিশু শংকু সমজদারের প্রয়াণ দিবসে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৩ মার্চ) দুপুরে নগরীর আশরতপুর চকবাজারে শহীদ শংকু সমজদারের নামে প্রতিষ্ঠিত শংকু সমজদার বিদ্যানিকেতনে এই স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ তানিয়া সুলতানা সুমির সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাংলাদেশ বেতার রংপুর কেন্দ্রের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাসের সাথে শংকু নামটি সবসময় উচ্চারিত হবে।
শিশু বয়সেই শংকু স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দিয়েব অকাতরে প্রাণ দিয়েছিলেন। যুদ্ধ শুরুর আগেই শংকুর রক্তে রক্তাক্ত হয়েছিল রংপুরের পিচঢালা পথ। যার আত্মত্যাগে স্বাধীনতার দাবি আরও বেগবান হয়েছিলো।
শংকুর অকাল মৃত্যুতে শুধু রংপুরের মানুষ নয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও কেঁদেছিলেন। ৭ই মার্চের ভাষণে শংকুকে ঘিরে বঙ্গবন্ধু রংপুরের কথা বলেছিলেন। এতে প্রধান আলোচক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু বলেন, নতুন প্রজন্মকে শহিদ শংকু সমজদারের আত্মত্যাগ সম্পর্কে জানতে হবে।
রংপুরবাসীর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের গৌরবান্বিত ইতিহাসের সাথে এই প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস চর্চার পরিধি বাড়াতে হবে।
পরে শহীদ শংকু সমজদার বিদ্যানিকেতন এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠন গুণগুণ এর শিল্পীরা সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেন। এতে কবিতা আবৃতি, দেশাত্ববোধক গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন শিল্পীরা।
পুরো অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন বিদ্যানিকেতনের শিক্ষক শারমিন আক্তার ও রওজাতুন নাহার প্রেমা।অনুষ্ঠানে মাইশা তারান্নুম, কুয়াশা আক্তার এশা, প্রযুক্তা অক্ষর, ফাতেমা-তুজ-জোহরা বৃষ্টি, সফুরা খাতুন ও ফারহানা আক্তার বীথি নৃত্য,
সংগীত ও আবৃত্তি উপস্থাপন করেন। সভায় সাংষ্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ডাঃ মফিজুল ইসলাম মান্টু, কারমাইকেল কলেজের বাংলা বিভাগের ভূতপূর্ব অধ্যাপক মোহাম্মদ শাহ্ আলম, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক উমর ফারুক,
শহিদ শংকু সমজদার বিদ্যানিকেতনের উপাধ্যক্ষ আফিফা ইশরত চেতনা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।উল্লেখ্য ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ কারফিউ ভেঙে রংপুরেও হরতাল পালিত হয়।
সেই অসহযোগ আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিলে আলমনগর এলাকায় অবাঙ্গালীর গুলিতে শহীদ হন স্কুলপড়ুয়া ১২ বছরের শিশু শংকু সমজদার।