একটার পর একটা ঘটনা ঘটার পরেও পার পেয়ে যায় ধর্ষক। আর নীরব দর্শক হয়ে চেয়ে রই আমরা সমগ্র জাতি। পত্রিকার পাতা উল্টাতেই চোখে পড়ে ধর্ষণ। দুচোখের বারি বর্ষণ ছাড়া আমরা আর কিইবা করতে পারি।
মিডিয়ার সামনে বক্তব্য, আর টকশোতে এসে মন্তব্য, এই সমস্যা সমাধানের গন্তব্য আবিষ্কারে কতটা কার্যকর হবে, সেটা ভাবাই হলো এখন কর্তব্য।
আর বিশেষ দ্রষ্টব্য বিষয় হল এই যে;
আগেকার দিনে আমরা পরিসংখ্যান পেতাম, কোন নির্দিষ্ট বছরের গড় ধর্ষণের সংখ্যা। আর এখনকার দিনে আমার মনে হয়, প্রতি মিনিটের গড় পরিসংখ্যান করলেও সেই ফলাফল হয়তো double-digit কে অতিক্রম করতে পারে। সত্যিই এটা মহা ভাবনার বিষয়।
শহর, বন্দর, নগর এমনকি গ্রাম-গঞ্জ অথবা অজ -পাড়াগাঁও এখন এই ব্যাধিতে আক্রান্ত। দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে হায়দার হোসেন ২০০১ সালে যে গানটি গেয়েছিলেন । সেই গানটি আজ বড্ড বেশি মনে পড়ছে।
স্বাধীনতা কি নিরীহ লোকের অকারণে প্রাণদন্ড?
স্বাধীনতা কি পানির ট্যাঙ্কে গলিত লাশের গন্ধ?
স্বাধীনতা কি হরতাল ডেকে জীবন করা স্তব্ধ?
স্বাধীনতা কি ক্ষমতা হরণে চলে বন্দুক যুদ্ধ?
স্বাধীনতা কি সন্ত্রাসী হাতে মারণাস্ত্রের গর্জন?
স্বাধীনতা কি অর্থের লোভে বিবেক বিসর্জন?
আজ নেই বর্গী, নেই ইংরেজ, নেই পাকিস্তানী হানাদার,
আজো তবু কেন আমার মনে শূণ্যতা আর হাহাকার?
আজো তবু কি লাখো শহীদের রক্ত যাবে বৃথা?
আজো তবু কি ভুলতে বসেছি স্বাধীনতার ইতিকথা?
কি দেখার কথা কি দেখছি? কি শোনার কথা কি শুনছি?
কি ভাবার কথা কি ভাবছি? কি বলার কথা কি বলছি?
তিরিশ বছর পরেও আমি স্বাধীনতাটাকে খুঁজছি।।
হায়দার হোসেন ২০০১ সালে গানটি গাইলেও ২০২০ সালের বাংলাদেশ স্বাধীনতার প্রায় ৪৯ বছর অতিক্রম করেছে। স্বাধীনতার এই ৪৯ বছরের ব্যবধানে এখনো গানটির প্রায় প্রত্যেকটি কথাই জীবন্ত। প্রাণবন্ত জাতি হয়েও আমরা গানের কথাগুলোকে ভুল প্রমাণ করতে পারিনি। আর যা পেরেছি তা কখনোই কাম্য নয়।
জাতির চরিত্র আজ অতলে নিমজ্জিত। সুসজ্জিত এই জাতি কী করে এত নিচে নামতে পারে? তার ব্যাখ্যা কোন বুদ্ধিজীবী আজও দেয়নি। একজন নারী কারো বোন কারো ভাবি কারো না কারো কাকি কারো ভাগ্নি।
কারো ভাতিজি এই তো স্বাভাবিক পরিচয়। আমরা কি হই এই বন্ধন এর বাইরে নই তাই যদি হয় তাহলে কেন কাউকে নির্জনে পেলেই তাকে ধর্ষণ করতে হবে কারো প্রতি আকর্ষণ জাগলেই তা ধর্ষণের ওখানেই পরবর্তীতে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ উদ্ধার করে ছিন্ন বস্ত্র অথবা বস্ত্রহীন নারীর লাশ তাহলে বিষয়টা কী দাঁড়াল প্রথমে ধর্ষণ তারপর প্রমাণ বিনাশ করার জন্য নির্মাণ এবং নিঃসংশ ভাবে হত্যা অর্থাৎ একই সাথে দুটি অন্যায় ধর্ষণ করবি তাহলে হত্যা করলে কেন?
আর যদি। হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল তবে ধর্ষণ করলি কেন অবাক পৃথিবীর নির্বাক জাতি কি ক্ষতি হতো এসব না করলে।
দর্শকদের কোন লোমহর্ষক এক ঘটনা যেন সারা পৃথিবী দেখতে পারে ধর্ষকরা নিজেরাই দায়িত্ব নিয়ে আজকাল সে ব্যবস্থা করছে অর্থাৎ ভিডিও করে ইন্টারনেটে সার্চ করো এবং বিকৃত রুচি তাদের যাদের ছত্রছায়ায় তারা এত জঘন্য এবং অন্য কাজগুলো করছে তাদের সকলকে আইনের আওতায় আনতে হবে তবে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা কঠিন কারণ তারা সব সময় ক্যামেরার পিছনে থাকে তারা কখনোই সামনে এসে দাঁড়ায় না। প্রিয় পাঠক এতক্ষণে নিশ্চয়ই আপনাদের মনের মধ্যে প্রশ্ন জেগেছে তাহলে এর সমাধান কি?
আমার মতে সমাধান একটাই আইনের সুশাসন অর্থাৎ কোনো ঘটনা ঘটার সাথে সাথে অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিলেই সব অপরাধীরা ধীরে ধীরে অপরাধ জগত থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করবে।
লেখক,
মোঃ হিরন খাঁন
তরুণ কবি,সঞ্চালক ও আলোচক।