নোটিশ:
  • আরো উন্নত ও সুপার ফাষ্ট ওয়েব ডেভেলপের কাজ চলছে।  আমাদের সাথে থাকার জন্য দেশ-বিদেশের সকল পাঠক ও সাংবাদিক'দের ধন্যবাদ।

বোয়ালমারীতে অর্ধকোটি টাকার সম্পদ জবরদখলের অভিযোগ

এস এম রুবেল বোয়ালমারী ফরিদপুর প্রতিনিধি।
  • আপডেটের সময় : সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫
96.5kভিজিটর

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় অর্ধকোটি টাকা মূল্যের জমি জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। জমির প্রকৃত মালিকরা দীর্ঘদিন ধরে আদালতের রায় নিয়ে জমির দখল বুঝে পাওয়ার চেষ্টা করলেও প্রভাবশালী মহলের চাপে তা ব্যর্থ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের সহস্রাইল বাজার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ১৩৯ নং সহস্রাইল মৌজার ১৫২ নং এসএ খতিয়ানের ২৩৮১ নং দাগের অধীন ৬৬ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন মৃত মীর খোরসেদ আলী ও মৃত মীর হাশেম আলী।

তাদের উত্তরাধিকার সূত্রে জমির মালিকানা পান তাদের সন্তানরা। রোকেয়া বেগমের ওয়ারিশ হলেন: বেলায়েত শেখ, আজাদ শেখ, আসাদ শেখ, রবিউল শেখ, কন্যা শিউলি বেগম, হাছিনা বেগম, ঝর্না বেগম, সাবিনা বেগম।

১৯৮৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মৃত খোরসেদ আলীর দুই ছেলে কাশেম আলী ও মোশারেফ আলী এবং মৃত মীর হাশেম আলীর কাছ থেকে পৃথকভাবে মোট ১৮ শতাংশ জমি কিনে নেন স্থানীয় বাসিন্দা রোকেয়া বেগম, যিনি সহস্রাইল গ্রামের বাসিন্দা বারিক শেখের স্ত্রী। পরে রোকেয়া বেগমের নামে বিএস রেকর্ডে জমির মালিকানা অন্তর্ভুক্ত হয়।

ভূমি রেকর্ডের তথ্যমতে, রোকেয়া বেগমের নামীয় বিএস ১০১১ নং খতিয়ানে ১৮ শতাংশ জমি থেকে ১৬ শতাংশের মালিকানা নিশ্চিত হয়। তবে পরবর্তীতে রাস্তার উন্নয়নকাজের জন্য ২ শতাংশ জমি সরকারি কাজে চলে যাওয়ায় তার ভোগদখলযোগ্য জমির পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬ শতাংশ। রোকেয়া বেগমের মৃত্যুর পর তার ৪ পুত্র ও ৪ কন্যা ওয়ারিশসূত্রে জমির বর্তমান মালিক হন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ২০০১ সালের দিকে আওয়ামী লীগের কিছু প্রভাবশালী নেতা রাস্তার পাশে জমির একটি অংশ ফাঁকা পেয়ে সেখানে টিনের ঘর নির্মাণ করে দখল করে নেন। বর্তমানে তারা জমির প্রায় ৫ শতাংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন — উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক, রুপাপাত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক চেয়ারম্যান আজিজার মোল্যা; শেখর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা (মৃত) সোহরাব শেখ; যুবলীগ নেতা ইমরুল চৌধুরী; মিহির বিশ্বাস; মৃত লাল মিয়া মণ্ডল; সহস্রাইল বাজারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা অরুন মিয়া এবং আব্দুল জলিল মোল্যা।

ভুক্তভোগী ওয়ারিশরা জানান, অভিযুক্তরা দাবি করছেন যে, তারা কোমেলা বেগম নামের এক মহিলার কাছ থেকে জমিটি কিনেছেন। তবে বাস্তবে কোমেলা বেগম তার নিজস্ব জমি অনেক আগেই বিক্রি করে দিয়েছেন এবং বর্তমানে দখলকৃত জমির সাথে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

জমির প্রকৃত মালিকগণ আদালতে মামলা দায়ের করে ২০০৫ সালে রায় পান। রায়ে তাদের মালিকানা স্বীকৃতি পেলেও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের বাধার কারণে তারা এখনো জমি দখলে নিতে পারেননি। ফলে পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক ও সামাজিকভাবে ভোগান্তির শিকার হয়ে আসছে।

ভুক্তভোগী ওয়ারিশরা জানান, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের জমি ফিরে পেতে চাই। বারবার প্রশাসনের দারস্থ হয়েছি। আদালতের রায়ও আমাদের পক্ষে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতা নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে জমি ছাড়তে রাজি নয়। এখন আমরা প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”

এ বিষয়ে মিহির বিশ্বাস বলেন, “আমরা কোমেলার ৩ শতাংশ জমি কিনেছিলাম। ২০০১ সালে ফাঁকা পেয়ে আমরা এ জমি দখল করে দোকান ঘর তুলেছি।”

সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আজিজার মোল্যা বলেন, “ওইখানে আমার নামে কোনো জমি নেই! ফাঁকা জায়গা ছিল, সে জমি সবাই দখল করে নিয়েছে। আমি সেটা কাওসার নামে একজনের কাছে পজিশন বিক্রি করেছি।”

যুবলীগ নেতা ইমরুল চৌধুরী বলেন, “কখনই ওরা এই জমি দখল করেনি। ওদের জমি ঘিরে দখল করে রেখেছিল।

২০২১ সালে সিএন্ডবি (সড়ক ও জনপথ) সংস্থা ভেঙে দেয়। পরে তাদেরকে ম্যানেজ করে খাদ ভরাট করে আমরা দখলে নিয়েছি। এ নিয়ে কোর্টে মামলা রয়েছে। মামলায় যে রায় হবে, সেটা আমরা মেনে নেব।”

সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম রাব্বানী সোহেল বলেন, “এটা নিয়ে শেখর ইউনিয়নের তহশিলদার একটি প্রতিবেদন দিয়েছে। এই জমি নিয়ে কোর্টে মামলা চলমান। তবে কোর্ট যাকে রায় দিবে, সে ওই জমি ভোগদখল করবে। সে জমি কোর্টের নির্দেশে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।”

নিউজ শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর
Copyright©2025 WSB News24 All rights reserved
Desing & Developed BY ServerNeed.Com
themesbazarwsbnews25
x